Durga Puja 2023: দুর্গাপূজার দিন এই ৭টি কাজ শাস্ত্র মতে মানা

বাঙালীদের শ্রেষ্ঠ এবং আনন্দের পূজা হল দুর্গাপূজা।দুর্গাপূজা মানে নতুনের ছোঁয়া, নতুন জামা কাপড় এবং ঘোরাফেরা, খাওয়া-দাওয়া, অনেকখানি আনন্দ। মহাপঞ্চমী থেকে বিজয়া দশমী পর্যন্ত দেবী দুর্গার কাছে আরাধনা করার পাশাপাশি আমাদের সকলের মন আনন্দে মেতে ওঠে। যদিও পূজা মহাপঞ্চমী থেকেই শুরু হয়ে যায় তবে বিশেষ করে মহাষষ্ঠী থেকে বিজয়া দশমী পর্যন্ত দুর্গাপূজা টা বেশি আরম্ভর পূর্ণভাবে শুরু হয়।

এই দিনগুলোতে মানুষ থাকবে আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে। বছরে একবার এই উৎসবের আনন্দে প্রায় সব বাঙালিই মেতে ওঠেন। কিন্তু পুজোর আনন্দের সঙ্গে পুজোর কিছু নিয়ম ও রীতিনীতি রয়েছে, যা সঠিকভাবে পালন করতে পারলে সারা বছরই মায়ের কৃপা বর্ষিত হবে সেই মানুষটির উপরে এবং সেই মানুষটির পরিবারের সকল সদস্যের মধ্যে।

দুর্গাপূজার দিন এই ৭টি কাজ শাস্ত্র মতে মানা
দুর্গাপূজার দিন এই ৭টি কাজ শাস্ত্র মতে মানা

ষষ্ঠীর দিন সন্তানদের কপালে মায়ের পূজা করা হলুদের ফোঁটা দেওয়া থেকে শুরু করে বিসর্জন পর্যন্ত চলে মায়ের পূজার নানা প্রকারের নিয়ম কানুন। পুজোর চার দিন অর্থাৎ ষষ্ঠী থেকে নবমী পর্যন্ত যদি নিরামিষ আহার গ্রহণ করা যায় তাহলে ভীষণভাবে মায়ের আশীর্বাদ প্রাপ্ত করা যায় এটা অনেকেরই বিশ্বাস। তবে যদি মায়ের ভোগ আমিষ হয় তাহলে তা গ্রহণ করা যেতে পারে বলে শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে।

সংসারে সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য মানুষ কত কিছুই না করে। তবে ভক্তিতে থাকে অনেকখানি শক্তি, তাই দুর্গাপূজার কয়দিন আপনি যদি বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে চলেন তাহলে আপনার সংসারে সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি আসতে বেশি সময় নেবে না। পুজোর কয়েকদিন যদি প্রত্যেকদিন গঙ্গাস্নান করা যায় সেটা আরো ভালো এবং এর পাশাপাশি শরীর ও মন শুদ্ধ হয়ে যায়। পুজোর সময় প্রতিদিন সকালে ১০৮ বার দুর্গা নাম জপ করলে সকল বিপদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায় বলে শাস্ত্রে বলা হয়েছে।

দুর্গাপূজা করুন এই নিয়মে আপনার উপর প্রসন্ন হবেন দুর্গতিনাশিনী

পূজার প্রতিটি দিন পুষ্পাঞ্জলি সহকারে মায়ের পূজা দিতে হবে, যদি সব দিন সম্ভব না হয়ে ওঠে তাহলে অন্তত সন্ধি পূজার পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া অত্যন্ত মঙ্গল জনক বলে মনে করা হয়। তবে এইসব নিয়মের পাশাপাশি এমন কিছু নিয়ম আছে। যা পূজোর এই দিনগুলিতে করা শাস্ত্র মতে নিষিদ্ধ।

তো চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক সেই নিষিদ্ধ কাজ গুলি সম্পর্কে:

কাজ ১) প্রথমত পুজোর দিনগুলিতে অর্থাৎ মহা পঞ্চমী থেকে বিজয়া দশমী পর্যন্ত চুল, দাড়ি, নখ কাটা যাবে না। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে পূজার কয়েকদিন আগেই সেগুলি সম্পন্ন করে রাখতে হব। এগুলি করা অশুভর ইঙ্গিত বলে মনে করা হয়।

কাজ ২) অতিথি নারায়ন তাই পূজার দিনগুলোতে যদি কেউ বাড়িতে আসে তাহলে তাঁদের আপ্যায়নের কোনরকম খামতি যেন না থাকে, তাঁদের সুন্দরভাবে আপ্যায়ন করতে হবে। কোন ভাবে অনাদর যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এছাড়া শুধুমাত্র পুজোর কয়েক দিনই নয় যখনই আপনার দরজায় কোন ভিক্ষুক অথবা অসহায় ব্যক্তি এসে দাঁড়াবেন তখন কিন্তু আপনার সাধ্যমত কিছু তাঁদের দান করতে অথবা সাহায্য করতে ভুলবেন না।

দুর্গাপূজার দিন গুলিতে কোন দিন কোন পোশাক পরবেন? চলুন জানা যাক

কাজ ৩) পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জামা কাপড় পরিধান করার কথা বলা হয়েছে, যদিও আপনার পূজাতে নতুন জামা কাপড় না হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই শুদ্ধ বস্ত্র পরিধান করতে হবে। পরিশুদ্ধ বস্ত্র পরিধান করার ক্ষেত্রে মনও থাকে শুদ্ধ, তাই দেবী মায়ের ভক্তিতে আপনার মন যতই শুদ্ধ থাকবে ততই কিন্তু আপনার সংসারে সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি বিরাজ করবে।

কাজ ৪) নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, যদি কোন বিষয়ে আপনার রাগ হয় তাহলে এই পূজার কয়েকদিন কাউকে বড় কোন কথা বলে কষ্ট দেওয়া যাবে না। এর ফলে দেবী সন্তুষ্ট হওয়ার পরিবর্তে আপনার প্রতি অসন্তুষ্ট হতে পারে এবং কাউকে কষ্ট দেওয়ার জন্য আপনিও কিন্তু নিজের থেকেই একটা অপরাধ বোধে ভুগতে পারেন।

কাজ ৫) বাড়ির চারপাশ থেকে শুরু করে বাড়ির বিভিন্ন জায়গা অপরিষ্কার রাখা যাবে না, এরপরে আপনি এই কয়দিন যে ভক্তি ভরে দেবীর আরাধনা করবেন আপনার বাড়ি ঘর যদি অপরিচ্ছন্ন থাকে তাহলে কিন্তু দেবী আপনার ঘরে প্রবেশ করবে না। সেই কারণে পূজার কয়েক দিন আগে থেকেই ঘরবাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখাটাও দুর্গাপূজার নিয়মের মধ্যেই ধরা যেতে পারে।

দুর্গাপূজা উপলক্ষে আপনার ও পূজার ঘরটিকে সাজান এই পদ্ধতিতে

কাজ ৬) মহা সপ্তমীতে ভোরবেলায় সকল দরজা, জানালার চৌকাঠে চন্দন ও সিঁদুরের ফোটা দেওয়ার রীতি নিশ্চয়ই কারোর অজানা নয়। এমনকি কোন মেশিন থেকে শুরু করে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র ও যন্ত্রপাতিতেও এই সমস্ত ফোটা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। তবে এই সময়টা খুব ভোরে ওঠে ভক্তি ভরে এই ফোঁটা দেওয়ার প্রথা চলে আসছে প্রাচীনকাল থেকেই। সেই কারণে কোন রকম অবহেলা না করেই অন্ধকার থাকতেই এই কাজ সম্পন্ন করতে হয় শঙ্খধ্বনি সহযোগে।

কাজ ৭) যদি আপনি সংকল্প করে ঠাকুর ঘরে প্রদীপ জ্বালিয়ে থাকেন তাহলে খেয়াল রাখতে হবে যে সেই প্রদীপ যেন কোনোভাবেই নিভে না যায় এই পূজার কয়েক দিন। সে ক্ষেত্রে বড় প্রদীপে বেশি করে তেল দিয়ে বড় বাতি দিয়ে আপনাকে প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখতে হবে। সংকল্প করে জালানো প্রদীপ কোনভাবেই নেভানো উচিত নয়, যতক্ষণ না পর্যন্ত বিজয়া দশমী পেরিয়ে যাচ্ছে। আর যদি কোন ভাবে সেটা হয়ে থাকে তাহলে সেটা অশুভর ইংগিত হতে পারে।

এই গাছগুলি দেবীপক্ষের মধ্যে বাড়িতে লাগান মা দুর্গা সকল দুঃখ বিনাশ করবেন

✨ পূজার বিভিন্ন বিধি নিষেধ মানার পাশাপাশি গৃহস্থ বাড়ির এই সমস্ত কাজগুলি যতই আপনি ভালভাবে করতে পারবেন ততই কিন্তু দেবীর আশীর্বাদ প্রাপ্ত করতে পারবেন। শাস্ত্র অনুসারে যে কাজগুলি করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে সেই কাজগুলি অবশ্যই আপনাকে না করে শুভ কাজ করতে হবে।

যার ফলে আপনার সমস্ত মনস্কামনা পূর্ণ হওয়ার পাশাপাশি সংসারে সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি বজায় থাকবে সারা বছর থেকে সারা জীবন। সেই কারণে এই ছোট ছোট বিষয়গুলি মাথায় রেখে দুর্গাপূজার কয়দিন মেনে চলুন এই বিধি নিষেধ গুলি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top