Chaitra Navratri 2024: চৈত্র নবরাত্রিতে এই কাজগুলি ভুলেও করবেন না

হিন্দু ধর্ম অনুসারে দেবী দুর্গার আরাধনা হয়ে থাকে বছরে বিভিন্ন সময়ে। তবে সেটা ভিন্ন ভিন্ন নামে। শারদীয়া দুর্গাপূজা সকলের কাছে খুবই পরিচিত তবে চৈত্র নবরাত্রী এই উৎসব থেকে শুরু হয়ে যায় নববর্ষ।

নয় দিন ধরে চলা দেবী দুর্গার আরাধনার মধ্যে অনেক ভক্তগণ বিশেষ নিয়মগুলি ভক্তি ও নিষ্ঠার সাথে মেনে চলেন দেবীর আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য। এছাড়াও এমন অনেক ভুল কাজ রয়েছে যেগুলি এই চৈত্র নবরাত্রি উৎসবের সময় কোনভাবেই করা যাবে না, না হলে দেবী সকলের উপরে রুষ্ট হতে পারেন।

চৈত্র নবরাত্রি পূজা: চৈত্র নবরাত্রিতে এই কাজগুলি ভুলেও করবেন না
চৈত্র নবরাত্রি পূজা: চৈত্র নবরাত্রিতে এই কাজগুলি ভুলেও করবেন না

তো চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক চৈত্র নবরাত্রি তে যে কাজ গুলি আপনি কখনোই ভুলেও করবেন না:

১. আমিষ খাওয়া যাবে না:

প্রতিটি ব্রত পালন করার সময় অবশ্যই এই নিয়ম পালন করে থাকেন সকল ভক্তরা। তেমনি নবরাত্রীর সময় ভুলেও মাছ-মাংস অথবা আমিষ জাতীয় কোন খাবার কোনভাবেই খাওয়া যাবে না। এই সময় আমিষ খাবার খাওয়ার উপর সম্পূর্ণ রূপে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

নবরাত্রি সময় মা দুর্গার সকল ভক্তরা ব্রত রাখেন, উপবাস পালন করেন, সে ক্ষেত্রে নিজেদের শরীর মন সবকিছু শুদ্ধ ও পবিত্র রাখতে এই নিয়মটা প্রথমত পালন করতেই হবে। এমনকি যারা উপবাস রাখবেন না, তারাও কিন্তু মাছ মাংস খাবেন না। এক কথায় বাড়িতে সম্পূর্ণরূপে আমিষ নিয়ে আসা নিষিদ্ধ।

২. নখ কাটা যাবে না:

স্বাভাবিক নিয়ম অনুসারে আমরা সকলেই নখ কেটে থাকি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে এবং স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রেখে। তবে এইটা এই নবরাত্রীর আগে করে নেওয়াটা জরুরী। ধর্মের পাশাপাশি জ্যোতিষ শাস্ত্র তে নবরাত্রির সময় নখ কাটতে নিষেধ করা হয়েছে।

এর ফলে মা দুর্গা খুবই রাগান্বিত হতে পারেন। এই ক্ষোভ আপনার জীবনে নানা ধরনের সমস্যা ও অশান্তির সৃষ্টি করতে পারে। তাই কখনো নবরাত্রির এই কদিন আপনি নখ কাটতে পারবেন না।

চৈত্র নবরাত্রির উপবাসে খাওয়া নিয়ে এই ভুলগুলি করবেন না

৩. চুল কাটা যাবে না:

বিশেষ করে ছেলেদের নিয়ম মাফিক তো চুল কাটতেই হয়, মেয়েরা না হয় একটা সময় পরে গিয়ে চুল কেটে থাকে। চৈত্র নবরাত্রি সহ চারটি নবরাত্রি তে আমিষ খাবার বর্জন করার পাশাপাশি এই নয় দিন চুল কাটা একেবারে উচিত নয়। এছাড়াও সঞ্চয় করা উচিত নয় বলে জানা যায়। কথিত আছে যে এটি করলে দেবী লক্ষ্মী রুষ্ট হতে পারেন এই সময়।

৪. পেঁয়াজ, রসুন খাওয়া যাবে না:

পেঁয়াজ এবং রসুন তামসিক খাবারের মধ্যে আসে। তামসিক মানে পেঁয়াজ, রসুন মন ও শরীরের ক্ষতি করতে পারে। সেই কারণে নবরাত্রীর সময় এগুলি নিষেধ করা হয়েছে।

এগুলি মানসিক অবসাদ সৃষ্টি করে বলেও বিশ্বাস করা হয়। ধর্ম অনুসারে নবরাত্রির সময় তামসিক খাবার খাওয়া ভালো বলে মনে করা হয় না। তাই এই নয় দিন যাবত আপনাকে সাত্ত্বিক খাবার গ্রহণ করতে হবে।

৫. চামড়ার জিনিসপত্র পরা যাবে না:

প্রসাধনি হিসেবে আমরা সকলেই কমবেশি চামড়ার জিনিসপত্র ব্যবহার করে থাকি। চামড়ার জুতো, চামড়ার জ্যাকেট, চামড়ার বেল্ট, ব্রেসলেট, ইত্যাদি অনেকেই ব্যবহার করে থাকেন। তবে নবরাত্রীর এই নয় দিন যাবত এগুলি একেবারে এড়িয়ে চলতে হবে।

এর পিছনের কারণ হলো চামড়ার জিনিসপত্র পশুর চামড়া দিয়ে তৈরি এবং এটাকে অশুভ বলে মনে করা হয়। তাই নবরাত্রির সময় চামড়ার তৈরি বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র আপনাকে বর্জন করতে হবে অথবা এই কদিন আপনাকে এগুলো থেকে দূরে থাকতে হবে।

চৈত্র নবরাত্রিতে কি করা উচিৎ আর কি উচিৎ নয়, জেনে নিন

৬. মদ্যপান করা যাবে না:

যে কোনো নেশা জাতীয় দ্রব্য অথবা পানীয় শরীরের ক্ষতির পাশাপাশি ধর্মের মধ্যে দিয়ে কিন্তু সম্পূর্ণ রূপে নিষেধ করা হয়েছে। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে কোন পবিত্র অনুষ্ঠান অথবা উৎসবের সময় অ্যালকোহল সেবন করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।

চৈত্র নবরাত্রি মাতৃ দেবীর পূজার জন্য সবচেয়ে পবিত্র বলে মনে করা হয়। সেই কারণে নবরাত্রি পূজা তে এই নয় দিনে মদ খাওয়া এবং মাদক জাতীয় কোন দ্রব্য গ্রহণ করা একেবারেই উচিত নয়।

৭. কাউকে গালাগালি দেওয়া যাবে না:

রাগের মাথায় অনেকেই মাথা গরম করে মুখ থেকে কটু বাক্য উচ্চারণ করেন, কাউকে গালাগাল করেন বা খারাপ কথা বলে থাকেন। তবে নবরাত্রীর সময় কাউকে অশুভ বা গালিগালাজ কথা বলা থেকে একেবারে এড়িয়ে চলতে হবে। এর কারণ হলো নবরাত্রি হল দেবীর আরাধনা ও তার কাছে প্রার্থনা করার সময়।

এই সময় কোনভাবেই রেগে গিয়ে মাথা গরম করে কারোর উপরে গালাগাল অথবা বাজে কথা বর্ষণ করা উচিত নয়। ভুল শব্দ ব্যবহার করলে দেবী মা অসন্তুষ্ট তো হবেনই, তার সাথে সাথে আপনার জীবনে নেমে আসবে অমঙ্গল তাই এটা করা থেকে বিরত থাকুন।

ধর্ম অনুসারে অনেকেই নিজেকে সংযত রাখতে সচেষ্ট হন ঈশ্বরের আশীর্বাদ প্রাপ্ত করার জন্য। ধৈর্য শক্তি এবং সহনশীলতা এক্ষেত্রে ঈশ্বরের পরীক্ষা বলা যায়।

ঈশ্বর পরীক্ষা করেন যে, কোন ভক্ত তাকে মন থেকে ডাকছে আর নিজেকে সংযত রাখতে পেরেছে। দেবী দুর্গার বিশেষ কৃপা পাওয়ার জন্য করা যায় বলে ধর্মীয় বিশ্বাসের কিছু জিনিস এড়িয়ে চলা তো অবশ্যই উচিত।

যদি কোন ভক্ত এগুলো পালন না করেন তবে তাকে দারিদ্র্যের পাশাপাশি অনেক ঝামেলা পোহাতে হবে সারা জীবন। সেই কারণে এই সাধারণ বিষয়গুলি কদিন মেনে চললেই জীবনে আসবে সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি।

তাহলে কেনই বা নিজের ভুলের কারণে নিজের জীবনের ক্ষতি ডেকে আনবেন, তাই না ! দেবী দুর্গার আশীর্বাদ বর্ষিত হোক সকল পরিবারের উপর, আর সকলের জীবন হয়ে উঠুক সুন্দর, সুসজ্জিত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top