কোম্পানির সমাপ্তি কি? কিভাবে কোন কোম্পানি সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ হয়? নিয়ম জানুন

কোম্পানির সমাপ্তি মানে কি? কেন হয় কোন কোম্পানি বন্ধ? কোম্পানি বন্ধ করতে হলে কি কি নিয়ম মানতে হবে?  অধিনিয়ম 201 আনুসারে কোম্পানি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যাওয়া অথবা কোম্পানির সমাপ্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।

কোম্পানির সমাপ্তি কি? কিভাবে কোন কোম্পানি সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ হয়? নিয়ম জানুন
কোম্পানির সমাপ্তি কি? কিভাবে কোন কোম্পানি সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ হয়? নিয়ম জানুন

যখন কোন কোম্পানি আইন অনুসারে অবৈধ হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে, তখন সেই কোম্পানি সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর এক্ষেত্রে আইন অনুসারে 201 অনুসারে কোন কোম্পানির সম্পূর্ণ রূপে সমাপ্ত করা হয়ে থাকে।

কোম্পানির সমাপ্তি আসলে কি?

কোম্পানির সমাপ্তি এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে সেই কোম্পানি আর কোনভাবেই চালানো সম্ভব নয়। আর কোম্পানির সম্পত্তি, তার লেনদেন আর কর্মচারীদের সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আইনত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে।

সেই সম্পত্তির কোনো ঋণ এর ভর পাই করা এবং শেষে সদস্যদের মধ্যে তাদের অধিকার অনুসারে কোন কিছু বিবরণ জারি করা।

ভারতে কোম্পানির সমাপ্ত করার প্রক্রিয়া কে নিয়ন্ত্রিত করার জন্য আইন-কানুন কি?

কোম্পানি অধিনিয়ম 2013 অনুসারে 270 কোম্পানির সমাপ্তির জন্য প্রক্রিয়া নির্ধারিত করা হয় এই সমাপ্তি দুই প্রকার হয়ে থাকে :-

  • অধিকরণ দ্বারা এবং
  • ইচ্ছা অনুসারে

১) অধিকরণ দ্বারা কোন কোম্পানিকে সমাপ্ত করার প্রক্রিয়া: 

কোম্পানি অধিনিয়ম 2013 অনুসারে একটি কোম্পানিকে ট্রিবুনাল দ্বারা সমাপ্ত করা যেতে পারে। যদি কোম্পানি নিজের ঋণ এর ভর পাই করার ক্ষেত্রে অসমর্থ হয়ে থাকে। কোম্পানির বি সি এস সংকল্প দ্বারা নিশ্চিত করা যায় যে, কোম্পানির ট্রিবুনাল দ্বারা সমাপ্ত করতে হবে।

তার ফলে অখন্ডতা, রাজ্যের সুরক্ষা, বিদেশি রাজ্যের সাথে মৈত্রী পূর্ণ সম্বন্ধ, যোগাযোগ, সার্বজনীন ব্যবস্থা, সভ্যতা অথবা নৈতিকতা ইত্যাদি বিষয়ে ভালোর জন্য এমনটা করা যেতে পারে। না হলে ঋণগ্রস্ত কোম্পানি এই সমস্ত বিষয়ের উপরে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।

২) একটি কোম্পানির সৈচ্ছিক সমাপ্তি অথবা স্বেচ্ছায় সমাপ্তি করা:

কোন কোম্পানি কে সমাপ্ত করার জন্য কোম্পানির সদস্য দ্বারা ও স্বেচ্ছায় সমাপ্ত করা যেতে পারে। কোম্পানির সমাপ্তির জন্য বিশেষ প্রস্তাব দেওয়া যেতে পারে।

সামান্য বৈঠকে কোম্পানি একটি প্রস্তাব রাখতে পারে, যার অনুসারে কোম্পানিকে সংস্থার অনিয়ম অথবা যে কোন প্রসঙ্গ তে ঘটা বিভিন্ন বিষয়, কারণ নিশ্চিত করা পর্যন্ত যদি কেউ থেকে থাকে সমাপ্তির উপর স্বেচ্ছায় এই বিষয়টি সমাপ্ত করা যেতে পারে। যার পরিণাম স্বরূপ সংস্থার অন্তরনিয়ম এটা বলে যে, কোম্পানি ভঙ্গ হওয়া জরুরী।

কোম্পানির স্বেচ্ছায় সমাপ্তি হওয়ার ক্ষেত্রে কি প্রক্রিয়া শামিল আছে?

১) দুটি নির্দেশকের সাথে একটি বোর্ড বৈঠক আয়োজিত করতে হবে। আর এইভাবে নির্দেশক দের দ্বারা দেওয়া ঘোষণা এর সাথে একটি প্রস্তাব রাখতে হবে তাদের, যাতে কোম্পানির কোনো রকম ঋণ যদি না থেকে থাকে অথবা সম্পত্তি বিক্রি দ্বারা সমস্ত আয় এর ব্যবহার করার পর তার ঋণ পরিশোধ করতে হবে।

২) স্পষ্টভাবে বয়ানের সাথে সংকল্প অনুযায়ী প্রস্তাবিত একটি সামান্য বৈঠকের জন্য লিখিত নোটিশ জারি করতে হবে।

৩) সামান্য বৈঠকে সাধারণ বহুমত থেকে সাধারণ সংকল্প অথবা বহুমত থেকে বিশেষ সংকল্প সমাপন এর উদ্দেশ্যর জন্য জানাতে হবে।

৪) সংকল্প করার পর লেনদার এর একটি বৈঠক আয়োজন করতে হবে। যা কিনা সমস্ত পক্ষের জন্য লাভজনক হয়ে থাকবে এবং কোম্পানি সমাপ্তি করতে পারবে।

৫) সংকল্প করার ১০ দিনের মধ্যে সমাপ্ত করার নিযুক্তির জন্য রেজিস্টার এর সাথে একটি নোটিশ দায়ের করতে হবে।

৬) এমন প্রস্তাবের ১৪ দিনের মধ্যে আধিকারিক রাজপত্র তে প্রস্তাব এর নোটিশ দিতে হবে। আর একটি সংবাদ পত্রে বিজ্ঞাপন দিতে হবে।

৭) সামান্য বৈঠকে ৩০ দিনের মধ্যে সামান্য বৈঠকে সামান্য অথবা বিশেষ সংকল্পে প্রমাণিত যে পত্র থাকবে তার কপি জমা করতে হবে।

৮) কোম্পানির মামলাকে সমাপ্ত করতে হবে আর সমাপ্ত করার খাতা তৈরি করতে হবে এবং সেখানে লিখিতভাবে জানাতে হবে।

৯) কোম্পানির একটি সামান্য বৈঠক আয়োজন করতে হবে।

১০) সেই সামান্য বৈঠকে যখন কোম্পানি মামলার সমাপ্তির সাথে সাথে কোম্পানির বিভিন্ন রকমের বই এবং সমস্ত আবশ্যিক অথবা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, এই বিষয়টি সম্পন্ন করার জন্য একটি বিশেষ প্রস্তাব রাখতে হবে।

১১) কোম্পানির শেষ সাধারণ বৈঠকে ১৫ দিনের মধ্যে কোম্পানির খাতার একটি কপি সাবমিট করতে হবে। আর আদেশ পাওয়ার জন্য বিচারাধীনকরণকে / ন্যায়াধিকরণ কে আবেদন করতে হবে।

১২) যদি বিচারপতি মনে করেন যে, এই খাতার মধ্যে কোনরকম বিষয় রয়েছে, তাহলে আবেদন প্রাপ্ত করার ৬০ দিনের মধ্যে কোম্পানিকে ভেঙে ফেলার জন্য আদেশ পেতে পারেন।

১৩) নিযুক্ত সমাপ্ত করা রেজিস্টার এর সাথে আদেশের একটি প্রতিলিপি দায়ের করতে হবে।

১৪) বিচারপতি দ্বারা আদেশপ্রাপ্ত করার পর রেজিস্টার আধিকারিক রাজপত্র তে একটি নোটিশ প্রকাশিত করবে যে, কোম্পানি ভঙ্গ করে দেওয়া হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে কিছু সহযোগিতাপূর্ণ বিকাশ কি? 

2015 তে সর্বোচ্চ বিচারালয় অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্ট এন সি এল টি (NCLT) আর এন সি এ এল টি (NCALT) এর সংবিধানিক বৈধতা কে জারি রেখেছে। এই জন্য এন সি এল টি (NCLT) আর এন সি এল এ টি (NCALT) এর স্থাপনার পরিনাম স্বরূপ এটা হতে পারে যে, সমাপ্তির ক্ষেত্রে একটি ভালো কার্য উন্নয়ন হতে পারে। কোম্পানির সমাপ্তি প্রক্রিয়া বোর্ড এবং উদ্যোগ জনিত বোর্ডের সমক্ষে বিশেষভাবে মামলা মোকদ্দমা স্তর থেকে বাঁচিয়ে থাকে এই পদ্ধতি।

কোন কোম্পানির অনেক ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে তখন সেই কোম্পানি কে আগে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো কোনো রকম পরিস্থিতি থাকে না। তাই বাধ্য হয়েই কোম্পানি বন্ধ করে দিয়ে সেই জায়গা বিক্রি করে অথবা কোম্পানি কারো কাছে বিক্রি করে দিয়ে সেই ঋণ পরিশোধ করা যেতে পারে। এর ফলে যেখান থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছে সেই পক্ষ মামলা-মোকদ্দমা করতে পারবেন না।

আর পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তারপর আপনি আবার সহজভাবে ঋণ ছাড়া বা বিবাদ ছাড়া কোম্পানি শুরু করতে পারবেন সঠিকভাবে, অল্প দিনের মধ্যে দিয়ে অন্য কোন কোম্পানি শুরু করতে পারবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top