Durga Puja 2023: দুর্গাপূজায় কিভাবে বাড়িতেই মঙ্গল ঘট স্থাপন করবেন? জেনে নিন

দুর্গাপূজার সময় মঙ্গল ঘট স্থাপন করতে হয় সেটা মন্দির হোক অথবা কোন বাড়িতে, যাঁদের বাড়িতে দুর্গাপূজা করার রীতি প্রচলিত রয়েছে, তাঁদের বাড়িতে প্রতি বছর এই দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়, আবার অনেক বাড়িতে দেখা যায় প্রতিমার পরিবর্তে শুধুমাত্র মঙ্গল ঘটেই দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়।

আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠ দিন থেকে দশম দিন পর্যন্ত দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। দেবীপক্ষের সূচনার অমাবস্যা হলো মহালয়া, আর এই মহালয়া থেকেই হিন্দুরা তর্পণ করে থাকেন তাঁদের পূর্বপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করার জন্য। দেবীপক্ষের শেষ দিনটি হল কোজাগরী পূর্ণিমা (কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা)।

সাধারণত আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম দিন পর্যন্ত শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পাঁচটি দিন যথাক্রমে দুর্গা ষষ্ঠী, মহাসপ্তমী, মহা অষ্টমী, মহানবমী এবং বিজয়া দশমী নামে পরিচিত সকলের কাছে।

দুর্গাপূজায় কিভাবে বাড়িতেই মঙ্গল ঘট স্থাপন করবেন? জেনে নিন
দুর্গাপূজায় কিভাবে বাড়িতেই মঙ্গল ঘট স্থাপন করবেন? জেনে নিন

আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষ থেকে বলা হয় দেবী পক্ষ, দেবীপক্ষের সূচনার অমাবস্যা হলো এই মহালয়ার দিনটি, দেবীপক্ষের শেষ দিন কোজাগরী লক্ষ্মী পূজার পূর্ণিমার দিন, আর এই দিনে প্রতিটি গৃহস্থ বাড়িতে দেবী লক্ষীর পূজা অর্চনা করা হয়।

আবার কিছু জায়গা বিশেষে ১৫ দিন ধরে দুর্গাপূজা পালিত হয়। সে ক্ষেত্রে মহালয়ার আগের নবমীতে পূজা শুরু হয়। পশ্চিমবঙ্গের বিষ্ণুপুর শহরের মৃন্ময়ী মন্দির এবং অনেক পরিবারে এই রীতি প্রচলিত আছে বলে জানা গিয়েছে।

তো চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক বাড়িতে দুর্গাপূজা করতে গেলে সেখানে মঙ্গল ঘট স্থাপন করবেন কিভাবে:

সৌভাগ্য ফেরাতে পুজোর দিনগুলিতে এই রঙের পোশাক পরুন

মঙ্গল ঘট স্থাপন:

শুধুমাত্র দূর্গাপূজাই নয়, প্রতিটি পূজায় জলপূর্ণ ঘট অর্থাৎ মঙ্গল ঘটের প্রয়োজন হয়। যার মধ্যে দিয়ে আহবান করা হয় দেবীকে অথবা দেবতাকে। ঘটকে ঈশ্বরের নিরাকার অবস্থার প্রতিক হিসেবে গণ্য করা হয়। সেই কারণে ঘট স্থাপনের প্রতি পূজাতে অবশ্য নিয়ম হিসেবে পালন করা হয়।

এক কথায় বলে যেতে পারে কোন পূজা ঘট ছাড়া সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। ঘট স্থাপন করতে লাগে কোন পবিত্র জলাশয় এর মাটি, ধান, কাঁসা বা পিতলের ঘট, জল, নবপত্রিকা, ফুলের মালা, গোটা ফল, সিঁদুর ও নতুন গামছা। ঘটের উপর নবপত্রিকার প্রতিটি পাতায় সিঁদুরের টিপ দিতে হয়।

সাধারণভাবেই বেদ অনুসারে, ঋক বেদ, সাম বেদ, যজুর্বেদ অনুসারে ঘট স্থাপন করতে হয়। সামবেদ অনুসারে বেশি ঘট স্থাপন হয়, তাই এই পদ্ধতি অনুসরণ করাটাই শ্রেয় বলে মনে করা হয়। এরপর যে ঠাকুরের পূজা করা হবে তাঁর গায়ত্রী মন্ত্র জপ করতে হবে। পুজোর সময় ঘট কোনো কারণে হাত থেকে পড়ে গেলে ক্ষমাপ্রার্থনা করে নতুন ঘট স্থাপন করতে হবে এবং পুজো শেষ করে সেই ঘট বিসর্জন করতে হবে।

নবরাত্রির প্রথম দিনে উপবাস পালনকারী ভক্তরা বাড়ির মন্দিরে দেবীর পদ পূজা করেন এবং কলস প্রতিষ্ঠা করেন। যদি শাস্ত্র অনুসারে কলস অথবা ঘট স্থাপন একটি বিশেষ মুহূর্তে করা হয়, কলস অথবা ঘট স্থাপনের জন্য নির্দিষ্ট রয়েছে মাত্র কয়েক ঘন্টা। মনে করা হয় পবিত্র মুহূর্তে ঘট স্থাপন করলে তা অত্যন্ত শুভ ফল দেয়।

ভক্তদের ঘট স্থাপন করার পর প্রত্যেক ভক্তের উচিত পবিত্র মনে পৃথিবীর শান্তির জন্য প্রার্থনা করা এবং দেবীকে এই পৃথিবীতে উপস্থিত হওয়ার জন্য ভক্তিভরে অনুরোধ জানানো।

এই পূজায় সকলের নজর কাড়তে ছেলেদের সাজগোজ

মঙ্গল ঘট স্থাপন করার সময় এই বিষয়গুলি খেয়াল রাখুন:

মঙ্গল ঘট স্থাপন করার সময় বিশেষ কিছু বিষয়ের প্রতি যত্ন নেওয়া জরুরী, শুধুমাত্র স্থাপন করলেই হবে না, কিছু নিয়ম অবশ্যই মেনে চলতে হবে, তবেই মঙ্গল ঘট স্থাপন করাতে দেব-দেবী সন্তুষ্ট হওয়ার পাশাপাশি আপনার মঙ্গল সাধন হবে।

  • যেদিন মঙ্গল ঘট স্থাপন করবেন সেদিন সূর্য উদয়ের আগে ঘুম থেকে উঠতে হবে এবং প্রথমে স্নান করে নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে হবে। তারপরেই এই মঙ্গল ঘট স্পর্শ করতে পারবেন।
  • ঘট স্থাপন করার জন্য সেই ঘটের বা কলসের উপরে নারকেল রাখা হয় তাই একটি সুন্দর দেখতে নারকেল অথবা ডাব অবশ্যই আগে থেকে জোগাড় করে রাখতে হবে।
  • যে স্থানে ঘট স্থাপন করবেন সেই স্থানটি গঙ্গাজল দিয়ে সুন্দরভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখুন।
  • পূজার উপকরণের মধ্যে রয়েছে দুর্বা ঘাস, সুপারি, লাল কাপড়, মুদ্রা, হলুদ, নারকেল, প্রদীপ ইত্যাদি ইত্যাদি।
  • নবরাত্রির প্রথম দিনটি মা শৈলপূত্রি কে উৎসর্গ করা হয়, তাই এই দিনে মা শৈলপূত্রি কে বিশেষ পূজা করা হয়ে থাকে।

দুর্গাপূজা উপলক্ষে আপনার ও পূজার ঘরটিকে সাজান এই পদ্ধতিতে

বাঙালি দের মধ্যে দুর্গাপূজার ঘট স্থাপনের রীতি:

আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষে সমস্ত জায়গায় দুর্গাপূজার অনুষ্ঠান শুরু হয়ে যায়। আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষে ষষ্ঠ দিন থেকে দশম দিন পর্যন্ত শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পাঁচটি দিন যথাক্রমে দুর্গা ষষ্ঠী, মহাসপ্তমী, মহা অষ্টমী, মহানবমী এবং বিজয় দশমী নামে পরিচিত।

মহা ষষ্ঠীর দিন দুর্গাপূজার মধ্যে পড়ে ঘট স্থাপন। ঘট অথবা কলস হল ঈশ্বরের নিরাকার অবস্থা। ঈশ্বরকে সাকার এবং নিরাকার এই দুই অবস্থাতেই পূজা করতে হয়, না হলে পূজা বৃথা হয়ে যায়। ঘট স্থাপনের জন্য প্রয়োজন পড়ে পবিত্র জলাশয় এর মাটি, জল অথবা গঙ্গাজল, দুর্বাঘাস, ধান, ৫টি পাতা সমেত আম্রপল্লব, সিঁদুর।

দুর্গাপূজার দিন গুলিতে কোন দিন কোন পোশাক পরবেন? চলুন জানা যাক

মঙ্গল ঘট কেন স্থাপন করা হয়?

হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে পূজায় মঙ্গল ঘট স্থাপন করা অপরিহার্য। যে কোন পূজাতেই প্রথমে ঘট স্থাপন করতে হয় বলতে গেলে ঘট স্থাপনের মধ্যে দিয়ে ওই পূজার আনুষ্ঠানিকতার শুরু হয়ে যায়। যে পূজার জন্য ঘট স্থাপন করা হয়, মূলত ঘট স্থাপনের মধ্য দিয়ে ওই দেব অথবা দেবীকে আহ্বান জানানো হয় পূজা গ্রহণের জন্য।

আবার কোন কোন ক্ষেত্রে দেব এবং দেবীর জন্য দেখা যায় আলাদা আলাদা ঘট, বিশ্বাস অনুসারে ঘট কোন দেবী বা দেবতার মূর্তি বা প্রতিমা নয়। ঘট ভগবানের নিরাকার অবস্থার প্রতিক। সনাতন ধর্মের কাছে প্রত্যেক দেবদেবী এক একটি অভিন্ন নিরাকার পরম ব্রহ্মরই একটি সাকার রূপের প্রকাশ বলা যায়।

এছাড়া শাস্ত্রমতে ঘট হলো মঙ্গলের চিহ্ন, যেকোনো পূজায় আনুষ্ঠানিকভাবে, মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান, গৃহপ্রবেশ ইত্যাদি অনুষ্ঠানে ঘট স্থাপন করতে হয়। ঘটের মধ্যে আমের পাতা, বেল পাতা, ফুল ইত্যাদি দিয়ে ব্রহ্মা-বিষ্ণু ও মহেশ্বর এর পূজা করা হয়।

বেল পাতা হলো ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর এর প্রতি মানবজীবনকে ঘটের সঙ্গে তুলনা করা হয়। তার মধ্যে থাকে জল, জল হল জীবনের প্রতীক, প্রাণহীন শরীর যেমন মূল্যহীন, তেমনি জলবিহীন ঘটও মূল্যহীন।

এই গাছগুলি দেবীপক্ষের মধ্যে বাড়িতে লাগান মা দুর্গা সকল দুঃখ বিনাশ করবেন

মঙ্গল ঘট স্থাপনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য:

মঙ্গল ঘট স্থাপন করার পেছনে যে মাহাত্ম্য রয়েছে তা জানাটা অত্যন্ত জরুরী। ঘটের পিছনে যে আমরা নানা ভঙ্গিমার মূর্তি স্থাপন করে থাকি সেটা মূলত পূজাকে একটি বড় অনুষ্ঠানের রূপ দেওয়ার জন্য করে থাকি। যাতে ভক্তরা ওই মূর্তি দর্শনের জন্য পূজা স্থানে আসে এবং নিজের কল্যাণ লাভ করে এবং সেই মূর্তিকে দেব অথবা দেবী রূপে অনুভব করে সেখানে নিজের মনের কথা জানাতে পারেন।

আর এই মঙ্গল ঘটেই যে কোন দেবদেবী অবস্থান করেন, তার বড় প্রমাণ হলো পূজা শেষে পুরোহিত যখন বিসর্জন দেন তখন তিনি মন্ত্র উচ্চারণ শেষে ঘট নাড়িয়ে তা সম্পন্ন করেন অর্থাৎ তিনি সংকেত দেন বিসর্জন প্রকৃতপক্ষে হয়ে গিয়েছে এবারে প্রতিমা নিরঞ্জন করা যেতে পারে।

প্রতিমা বিসর্জন:

পূজা সম্পন্ন হলে সেই মূর্তি জলে বিসর্জন দেওয়া হয়। তবে জলে মুর্তি ডুবিয়ে দেওয়া বিসর্জন নয়, ওটা হলো পুরানো কে ত্যাগ করা পরের বছরের নতুন কিছু সৃষ্টির জন্য জলের মূর্তি ডুবিয়ে দেওয়া যে প্রকৃত বিসর্জন নয় তার আরো একটি প্রমাণ হল যে সব মন্দিরে পাথর, পিতল বা সোনা, রুপার স্থায়ী মূর্তি রয়েছে সেগুলোকে কখনোই জলে বিসর্জন দেওয়া হয় না। সেখানে শুধুমাত্র মঙ্গল ঘট নাড়িয়ে অথবা বিসর্জন দিয়ে পূজা সম্পন্ন করা হয়।

শুভ দুর্গা পূজা শুভেচ্ছা বার্তা ও স্ট্যাটাস ছবি

ঘটের সঙ্গে মানুষের দেহের প্রতিরূপ:

মঙ্গল ঘট অথবা পূজার যে কোন ঘট সম্পূর্ণ ঘটকে মানুষের দেহের প্রতিরূপ হিসেবে প্রকাশ করা হলেও এর বিভিন্ন অংশ কিছুটা ভিন্নার্থ নির্দেশ করে যেমন-

  • ঘটের চওড়া অংশ পৃথিবীকে নির্দেশ করে।
  • প্রসারিত অংশটি অর্থাৎ প্রসারিত যে কেন্দ্রটি রয়েছে সেটি জলকে নির্দেশ করে।
  • ঘটের ঘাড় অগ্নিকে নির্দেশ করে।
  • মুখের খোলা অংশ বায়ু কে নির্দেশ করে।
  • ঘটের মুখের ডাব ও আমের পাতা আকাশকে অথবা উদারতাকে নির্দেশ করে।
  • সর্বশেষে আসে সম্পূর্ণ ঘট, যাঁরা পূজা অর্চনার সাথে নিত্য দিন জড়িত রয়েছেন, তাঁরা অবশ্যই জানেন যে ঘটকে আমাদের দেহের প্রতিরূপ হিসেবে মান্যতা প্রদান করা হয়ে থাকে। শাস্ত্র অনুসারে আমাদের দেহকে ‘দেহঘট’ বলে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। তাই দেহের প্রতিরূপ হিসেবে ঘট প্রত্যেক পূজায় অপরিহার্য একটি উপাদান।

আপনার ভাগ্য ফেরাতে দুর্গাপূজার আগে ঘরে আনুন এই ৫ টি জিনিস

মঙ্গল ঘট স্থাপন করতে কি কি উপকরণ প্রয়োজন ?

পীঠ নির্মাণ :

ঘট স্থাপন করতে পঞ্চ শস্য, পঞ্চগুড়ি, পঞ্চ পল্লব, পঞ্চরত্ন, জল তথা গঙ্গাজল, মৃত্তিকা বা মাটি, নারকেল অথবা ডাব, গামছা, কান্ড কাঠি অথবা তীর কাঠি ইত্যাদি প্রয়োজন হয়। এই প্রত্যেকটি উপকরণ বা উপাদান ব্যবহার করার পিছনে রয়েছে সুনির্দিষ্ট কারণ।

ঘট স্থাপনের প্রথম পর্যায়ে পঞ্চগুড়ি দিয়ে পীঠ তৈরি করা হয়। এই পঞ্চগুড়ি হল ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ এবং ব্যোম তথা পঞ্চ মহা ভূতের প্রতীক। এই পঞ্চ মহা ভূতের উপর মাটি দিয়ে পীঠ তৈরি করা হয়।

মাটি দিয়ে, সাধারণত গঙ্গার মাটিকে নির্দেশ করা হয়েছে তবে গঙ্গার মাটি সংগ্রহ করা যদি সম্ভব না হয় তাহলে যে কোন পবিত্র পুকুরের অথবা নদীর মাটি দিয়ে এই পীঠ নির্মাণ করা যেতে পারে।

দেবী দুর্গা কে সন্তুষ্ট করতে এই বিষয়গুলি খেয়াল রাখবেন

মঙ্গল ঘটে পঞ্চবৃত্তি:

এরপর মাটি দিয়ে তৈরি বেদীর উপর পঞ্চ শস্য দেওয়া হয়। পঞ্চ শস্য আমাদের কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ ও মাৎসর্য্য এই পঞ্চবৃত্তির প্রতীক।

যেহেতু পূজায় মঙ্গল ঘট মানুষের দেহের প্রতিরূপ তাই এই পঞ্চবৃত্তি তার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এর পাশাপাশি এই মাটির বেদীতে সামান্য ধান, দুর্বা ঘাস, অর্পণ করা ও শাস্ত্রের বিধান রয়েছে এই বেদীতে ধান দেওয়ার অর্থ শস্যপূর্ণ বসুন্ধরা ও দুর্বাঘাস প্রদান করার অর্থ হল সবুজ, শ্যামল আমাদের এই ভূমি। আর এভাবে বেদী নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করা হয়।

দেবী দুর্গাকে কিভাবে পুজো করলে সৌভাগ্য ফিরে আসবে

মঙ্গল ঘটে স্বস্তিক চিহ্ন এবং পঞ্চরত্ন:

এবারে বেদীর উপর স্থাপন করা হয় মূল ঘট অথবা মঙ্গল ঘট। ঘট বসানোর সময় সিঁদুর দিয়ে ঘটের গায়ে স্বস্তিক চিহ্ন অঙ্কন করা হয়। ঘট সাধারণত মাটির অথবা পিতলের হওয়ার বিধান থাকলেও এখন বর্তমানে অভাবের কারণে স্টিলের ঘটও দেওয়া যেতে পারে।

তবে যেহেতু মাটি দিয়ে নির্মিত ঘট অগ্নিকে নির্দেশ করে তাই মাটির ঘট কে সর্বোত্তম বলে মনে করা হয়। এরপর ঘটের ভিতরে দেওয়া হয় পঞ্চরত্ন, এই পঞ্চরত্ন হল আমাদের মানবদেহের চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা ও ত্বক এই পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের প্রতীক।

ঘটের ক্ষেত্রে পঞ্চবৃত্তি যেমন প্রযোজ্য ঠিক তেমনি পঞ্চ ইন্দ্রিয়ও প্রযোজ্য। এর পরে ঘটে গঙ্গা জল ঢেলে পূর্ণ করা হয়, এখানে গঙ্গাজল হলো দেহ রস অর্থাৎ রক্ত।

মহাষষ্ঠীতেই দেবীর বোধন কেন হয়? জানুন তাৎপর্য

মঙ্গল ঘটে পঞ্চ পল্লব:

এবার এই ঘটের উপরে পঞ্চপল্লব দেওয়ার পালা। এখানে আমের পাতা ব্যবহার করা শাস্ত্রের বিধান তবে এর অভাবে আপনি অশ্বত্থ গাছের পাতা, বটগাছের পাতা, পাকুড় গাছের পাতা অথবা যজ্ঞডুমুরের পাঁচটি পত্র ব্যবহার করতে পারেন।

এই পঞ্চ পল্লব পঞ্চ বায়ু তথা পান, অপান, উদ্যান, সমান এবং ব্যান এর প্রতীক। অন্য মত অনুসারে ঘটের উপর যে পঞ্চ পল্লব দেওয়া হয় তা হলো গলা অথবা গ্রীবা।

⭐ শুধুমাত্র দুর্গা পূজাতেই নয়, প্রতিটি পূজায় মঙ্গল ঘট স্থাপন করতে এই একই নিয়মে আপনি নিজে থেকেই অথবা পুরোহিতের সাহায্যে বাড়িতে পূজা অনুষ্ঠানে মঙ্গল ঘট স্থাপন করতে পারবেন।

তবে প্রত্যেকটি নিয়ম মেনে যদি আপনি মঙ্গল ঘট স্থাপন করে থাকেন তাহলে আপনার এবং আপনার পরিবারের সকল সদস্যের উপরে বর্ষিত হবে ঈশ্বরের আশীর্বাদ। আর যে উদ্দেশ্যে আপনি এই পূজা সম্পন্ন করছেন সেই উদ্দেশ্য সম্পন্ন হবে খুব তাড়াতাড়ি। দুর্গাপূজাতে বাড়িতেই মঙ্গল ঘট স্থাপন করার জন্য এই সহজ নিয়ম আপনি অনুসরণ করে নিজে থেকেই ঘট স্থাপন করতে পারবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top