(Har Ghar Tiranga 2023 – Azadi Ka Amrit Mahotsav 2023) স্বাধীনতার অমৃত উৎসব এর প্রধানমন্ত্রী হর ঘর তিরঙ্গা অভিযান কি? এই অভিযানের প্রধান উদ্দেশ্য কি? প্রতি বাড়িতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন শুরু করুন।
স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করার জন্য স্কুল, কলেজ এবং আরো অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ক্লাব, বাজার কমিটি, বড়ো বড়ো কোম্পানি, সরকারি কর্মক্ষেত্র এবং আরও অন্যান্য জায়গাতে পতাকা উত্তোলন করা হয়। আর সেখানেই খুবই ধুমধাম ভাবে দেশ স্বাধীন হওয়ার এই দিনটি খুবই আনন্দের সাথে, গর্বের সাথে পালন করা হয়।
কিন্তু প্রতি বাড়িতে পতাকা উত্তোলন করা কিন্তু হতো না। তবে বর্তমানে একটি অভিযানের মধ্যে দিয়ে প্রতিটি ঘরে পতাকা উত্তোলন করে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করা জনসাধারণের মনে অনেকখানি উৎসাহের প্রেরণা যোগাবে।
হর ঘর তিরঙ্গা অভিযান কি?
হর ঘর তিরঙ্গা অভিযান এর অন্তর্গত স্বতন্ত্রতা দিবস অর্থাৎ স্বাধীনতা দিবস এর উপরে তিনদিন পর্যন্ত সমগ্র দেশে কুড়ি কোটির থেকেও বেশি ঘরে এই অভিযান এর মাধ্যমে পতাকা উত্তোলন করা হবে। কেন্দ্রীয় গৃহমন্ত্রী অমিত শাহ দেশের সমস্ত মুখ্যমন্ত্রী এবং কেন্দ্রশাসিত প্রদেশের উপ রাজ্যপাল আর প্রশাসকের সাথে স্বাধীন হওয়ার এই শুভ মুহূর্ত একটি মহোৎসব এর মধ্যে দিয়ে উদযাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন।
এই অভিযানের প্রস্তুতি নিয়ে সমীক্ষা করা হয়েছে যে, এই অভিযানের অন্তর্গত আগস্টের ১৩ তারিখ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত সমস্ত ঘরে পতাকা তোলা হবে, টানা তিন দিন ভোর সেই পতাকা উড়বে প্রতিটি ঘরে।
সমস্ত সরকারি এবং প্রাইভেট কোম্পানি ও শামিল রয়েছে এর মধ্যে। তার সাথে সাথে সমস্ত নাগরিককে তাদের ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, এবং আরো অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টে ভারতের জাতীয় পতাকা পোস্ট করার জন্য উৎসাহিত করা হবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষ উদযাপনের উপরে এই বিষয়টি অর্থাৎ এই অভিযান শুরু করতে চলেছেন। নাগরিকদের তাদের নিজস্ব ঘরে পতাকা উত্তোলন করার জন্য উৎসাহিত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, এই অভিযানের পিছনে মানুষের মনে দেশভক্তির ভাবনা জাগ্রত হবে এবং অন্যান্য উৎসবের মতো স্বাধীনতা দিবসটাকেও একটি উৎসবের মতোই পালন করা হবে।
হর ঘর তিরঙ্গা অভিযান নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২২ শে জুলাই টুইট করে বলেছেন যে, “এই বছর দেশের প্রত্যেক নাগরিক স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব উদযাপন করতে চলেছেন। যেখানে হর ঘর ১৩ তারিখ থেকে ১৫ ই আগস্ট পর্যন্ত এই পতাকা প্রতিটি ঘরে উড়বে। যার ফলে দেশের প্রত্যেক নাগরিক এর মধ্যে স্বাধীনতা আন্দোলন আর রাষ্ট্রের প্রতি মেলবন্ধন আরো বেশি গভীর হবে।”
Har Ghar Tiranga anthem song Video 2023
এই অভিযানের উদ্দেশ্য কি?
হর ঘর তিরঙ্গা অভিযানের মূল উদ্দেশ্য হলো নাগরিকদের মনের মধ্যে দেশভক্তির ভাবনাকে জাগ্রত করা। আর রাষ্ট্রীয় নীতিগুলির প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা বৃদ্ধি হওয়া। এটি ভারতের ধ্বজ সংহিতা ২০০২ ভারত সরকার দ্বারা তৈরি করা হয়েছে।
যেখানে ধ্বজ এর ব্যবহার, প্রদর্শনী এবং ওড়ানো এর উপরে গাইডলাইন প্রোভাইড করে। ভারতের ধ্বজ সংহিতা ২৬ শে জানুয়ারি ২০০২, যেটি প্রাইভেট পাবলিক আর গভারমেন্ট অর্গানাইজেশন দ্বারা ধ্বজ এর প্রদর্শন আর নিয়ন্ত্রিত করে থাকে।
জাতীয় পতাকার সাথে সেলফি কি? আর সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় হর ঘর তিরঙ্গা যোজনার জন্য ওয়েবসাইট কেন লঞ্চ করেছে?
কেন্দ্রীয় সংস্কৃতির মন্ত্রণালয় হর ঘর তিরঙ্গা যোজনার জন্য সমস্ত মানুষকে উৎসাহিত করছে এবং তাদেরকে জাগ্রত করার জন্য একটি ওয়েবসাইট লঞ্চ করা হয়েছে। যেখানে দেশের যেকোন নাগরিক জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে পারবেন।
নিজের দেশ ভক্তি দেখানোর জন্য জাতীয় পতাকার সাথে সেলফি নিয়ে সেটি এই ওয়েবসাইটের উপরে পোস্ট করা যেতে পারে। এই বছর স্বাধীনতা দিবসের ৭৫ সাল সম্পূর্ণ হওয়ার উপরে দেশের স্বাধীন হওয়ার এই মহোৎসব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুরু করেছেন। ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ তম গৌরবশালী বছর উদযাপন করার জন্য এই অভিযান শুরু করা হয়েছে।
যেখানে দেশের ২৮ টি রাজ্য, আটটি কেন্দ্র ও প্রদেশ গুলিও শামিল রয়েছে। তার সাথে সাথে ১৫০ থেকে বেশি জায়গাতে ৫০ হাজারের বেশি স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করার এই মহোৎসব সফলভাবে হওয়ার জন্য আয়োজন করা হয়েছে, যা কিনা সব থেকে বড় কার্যক্রম গুলির মধ্যে একটি।
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট | এখানে দেখুন |
কর্পোরেট মামলার মন্ত্রণালয় বলেছে যে, কোম্পানিগুলি নিজেদের কর্পোরেট সোশ্যাল রেস্পন্সিবিলিটি সিএসআর ফান্ড কে হর ঘর তিরঙ্গা (Har Ghar Tiranga) অভিযান এর সাথে জড়িত সমস্ত অ্যাক্টিভিটির জন্য খরচ করতে পারে। একটি সার্কুলার তে বলেছেন যে, এই অভিযান সম্বন্ধিত একটিভিটি যেমন বড় ধরনের একটি কাজ, সে ক্ষেত্রে অন্যান্য রিলেটেড এক্টিভিটির জন্য সিএসআর ফান্ড এর খরচ কোম্পানি অ্যাক্ট এর সিডিউল VII এর অন্তর্গত যোগ্য সি এস আর এক্টিভিটি রয়েছে।
কোম্পানি অ্যাক্ট ২০১৩ অন্তর্গত কিছু ক্যাটাগরি প্রফিটেবল কোম্পানি কে তাদের তিন বছরের অ্যানুয়াল অ্যাভারেজ নেট প্রফিট কে কমপক্ষে ২% সিএসআর এক্টিভিটির জন্য খরচ করা প্রয়োজন। এর ক্ষেত্রে সবাইকে উৎসাহিত করা হচ্ছে, যাতে রাষ্ট্রর প্রতি সমস্ত মানুষের ভালোবাসা আরো বেশি বৃদ্ধি পায় এবং প্রতিটি ঘরে জাতীয় পতাকা যেন উড়তে থাকে।
তিরঙ্গা অভিযানে জাতীয় পতকা কত টাকায় পাবেন? সরকার কত খরচ করছে?
কেন্দ্র সরকার হর ঘর তিরঙ্গা অভিযান এর উপরে কত টাকা খরচ করছেন? আর কিভাবে খরচ করছেন?
কেন্দ্র সরকার এই বছর স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে দেশের কুড়ি কোটি ঘরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার জন্য এই অভিযান শুরু করেছেন। সেই উদ্দেশ্যে কনফিডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া টেডার্স CAIT অনুসারে ভারতে প্রায় চার কোটি পতাকা উপলব্ধ রয়েছে। আর বাকি পতাকা অর্ডার করতে হবে তৈরি করার জন্য।
কেন্দ্রীয় সরকার অনুসারে পতাকা তিন সাইজে উপলব্ধ হবে অথবা পাওয়া যাবে আর এই তিন সাইজের পতাকার দাম ও কিন্তু আলাদা আলাদা হবে, তিনটি সাইজ অনুসারে দাম পড়বে ৯ টাকা, ১৮ টাকা, ২৫ টাকা। যেটা কেন্দ্র সরকার নির্ধারণ করেছে।
জাতীয় পতাকা তৈরি করে এমন কোম্পানি প্রথমে কেন্দ্র আর রাজ্য সরকারকে পতাকা ধার অথবা বাকির উপরে উপলব্ধ করিয়ে দেবে। দেশে সেই সমস্ত নাগরিক কে নিজেদের টাকা দিয়ে সেই পতাকা কিনতে হবে।
এছাড়া ১ লা আগস্ট থেকে ডাকঘরে ও এই পতাকা উপলব্ধ থাকবে। কেন্দ্র সরকারকে ২০ কোটি ঘরে পতাকা উত্তোলন করার যে লক্ষ রয়েছে সেক্ষেত্রে ন্যূনতম দাম দশ টাকা ও হতে পারে। তো সে ক্ষেত্রে এই অভিযানে মোট ২০০ কোটি টাকা খরচ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই ২০০ কোটি সেই সমস্ত মানুষদের পকেট থেকে যাবে, যারা পতাকা কিনবেন এবং পতাকা বানানোর জন্য নিজের সহায়তা করার পাশাপাশি ছোট এবং মাঝারি উদ্যোগ এর সাথে জড়িত ব্যবসায়ী আর বিজনেস হাউস কে পতাকা বানানোর জন্য যে টেন্ডার দেওয়া হয়েছে, যাতে বেশি পরিমাণে পতাকা তৈরি করা হয় এবং মানুষ খুবই সহজে তা পেতে পারেন।
তো বুঝতেই পারছেন যে, এই বছর স্বাধীনতা দিবসের ৭৫ তম বর্ষপূর্তি উদযাপনে আর কিন্তু বিশেষ বিশেষ কোনো জায়গাতে পতাকা উত্তোলন হবে না। বলতে গেলে প্রতিটি ঘরে পতাকা তোলা হবে, এবং সেই ছবি নিজেদের ফেসবুক একাউন্টে, টুইটারে এবং আরো অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করতে হবে। এর থেকে বোঝা যাবে যে প্রতিটি নাগরিক দেশের প্রতি সম্মান এবং শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
তার পাশাপাশি আরো অন্যান্য উৎসবের মতো স্বাধীনতা দিবসকেও একটি পূজা পার্বণ এর মত উদযাপন করতে পারবেন ঘরে ঘরে। যার ফলে এই দিনটির গুরুত্ব আরো অনেক গুন বেড়ে যাবে দেশের প্রতিটি নাগরিক এর কাছে।