Dol Yatra 2024: ভাগ্য বদলাতে দোল পূর্ণিমায় এই কাজগুলি করবেন না

দোল পূর্ণিমা অথবা হোলি এক রঙের উৎসব, ছোট থেকে বড় সকলেই আবির, বিভিন্ন রঙের রং সবকিছুতে মেতে ওঠেন। চারিদিক যেন রঙিন হয়ে ওঠে, আকাশে বাতাসে ভেসে বেড়ায় আবির, দোল উৎসব উপলক্ষে সব জায়গায় দোকানে দোকানে রংবেরঙের আবির, জল রং নানান রকমের হোলি খেলার সামগ্রির মেলা বসে যায়।

কিছু কিছু জায়গায় রং খেলা শুরু হয়ে যায় দুদিন আগে থেকেই। এই উৎসব পালন করার পিছনে ধর্মীয় তাৎপর্য থাকার পাশাপাশি এর মধ্যে জীবনের মাহাত্ম্য অনেকখানি লুকিয়ে রয়েছে।

প্রতিটি উৎসব, পুজা, শ্রী বৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে তবেই কিন্তু পালন করা হয়। বাড়িতে বিশেষ পুজো পাঠের আয়োজন করা হয়, সত্যনারায়ণের পূজা বিশেষভাবে সকল ঘরে ঘরে এই দিন হয়ে থাকে।

দোল পূর্ণিমা: ভাগ্য বদলাতে দোল পূর্ণিমায় এই কাজগুলি করবেন না
দোল পূর্ণিমা: ভাগ্য বদলাতে দোল পূর্ণিমায় এই কাজগুলি করবেন না

তবে পূজোর পাশাপাশি এই দিনে বিশেষ কিছু নিয়ম রীতি রয়েছে যেগুলি অবশ্যই অবশ্যই মেনে চলতে হয় আর এমন কিছু বিধি নিষেধ রয়েছে যেগুলি একেবারে করা ঠিক নয়। আপনার সংসারের সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি সর্বদাই বজায় থাকতে পারে সামান্য কিছু নিয়ম পালন করার মধ্য দিয়ে।

তো চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক, দোল পূর্ণিমায় আপনি কি করবেন আর কি করবেন না সে সম্পর্কে কিছু তথ্য:

দোল পূর্ণিমায় কোন কাজগুলি করলে আপনার মঙ্গল হবে:

দোল পূর্ণিমায় কোন কাজগুলি করলে আপনার মঙ্গল হবে, আর কোন কাজ গুলি একেবারেই করবেন না:

১) প্রথমত এই দিন খুব ভরে ঘুম থেকে উঠতে হয় কেননা উৎসব মানে কিন্তু সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে সেই উৎসবে তোড়জোড় শুরু করা। তবে এই দিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে স্নান সেরে নেওয়া, শুনতে অবাক লাগলেও, যে কিছুক্ষণ পরে তো হোলি খেলব তাহলে স্নান আগে কেন সারবো ?

এই দিন বিশেষ করে যদি গঙ্গা স্নান করতে পারেন তাহলে তো খুবই ভালো, গরমের মধ্যে পড়ে যেহেতু এই উৎসব, তাই ভোরে স্নান সেরে হোলি খেলার পর আবার স্নান করা আপনার জন্য কষ্টদায়ক হবে না, তার পরিবর্তে আপনার জীবনের জন্য তা মঙ্গলজনক।

২) দোলের দিন বাড়িতে সত্যনারায়ণের পূজার আয়োজন করুন এবং ব্রত পালন করুন। এর ফলে সুখ-সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পায় সংসারে। জীবনের সমস্ত অন্ধকার কেটে গিয়ে আলোর দেখা মিলতে পারে, আপনার স্বপ্ন সফল হতে পারে শীঘ্রই। উপোস করতে পারলে পূজোর জোগাড় করুন একেবারেই নিজের হাতেই।

৩) এই দোল পূর্ণিমার দিন গঙ্গাজল, হলুদ ও দুধ একসঙ্গে মিশিয়ে বাড়ির সদর দরজার সামনে স্বস্তিক চিহ্ন আঁকুন, তার সাথে ওম চিহ্ন আঁকতে পারেন। এতে বাড়ির যত নেগেটিভ এনার্জি রয়েছে তা ঘর থেকে দূরীভূত হবে তার পরিবর্তে সেই জায়গা পজিটিভ এনার্জি দখল করবে।

তার সাথে সদর দরজা তে আমের পাতা ও ফুল দিয়ে সাজাতে পারেন, এর ফলে ঘরে যেমন উৎসব উৎসব আমেজ থাকে, তেমনি দেবতাদের আগমন ঘটবে আপনার ছোট্ট কুটিরে।

৪) এই শুভদিনে বাড়িঘর অপরিষ্কার রাখবেন না নিশ্চয়ই ! তাই সুন্দর করে চারিদিকের পরিবেশ সাজিয়ে তুলুন। দরজার পাশে স্বস্তিক চিহ্ন আঁকার সাথে সাথে চারিদিকে সুন্দর আলপনা ও দিতে পারেন। এর ফলে আপনার পরিবার থেকে সমস্ত অশুভ ছায়া দূর হয়ে যাবে।

৫) দোলের দিন খুবই শুভ দিন, এই দিন অবশ্যই নিরামিষ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন, চেষ্টা নয় এই দিন তো একেবারেই ঘরে আমিষ তোলাই উচিত নয়।

৬) দোল পূর্ণিমার রাতে অবশ্যই চন্দ্র দর্শন করুন, এই দিন চাঁদকে অপূর্ব সুন্দর তো লাগেই সে তো একটা দিক, তার সাথে সাথে চাঁদের দিকে একটানা  বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকলে আপনার চোখের সাথে সাথে মনের এক প্রশান্তি আপনি অনুভব করতে পারবেন।

৭) পুজোর সময় বাড়িতে থাকা দেবদেবীর চরণে আবির দিতে একেবারেই ভুলবেন না। এই উৎসবের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আবির, যেটি আপনি পূজার জায়গায় অবশ্যই রাখবেন।

৮) রং খেলার আগে শ্রীকৃষ্ণের চরণে অবশ্যই রং ও আবির অর্পণ করুন, তারপরেই কিন্তু রং খেলা শুরু করবেন। পুজোর সময় বাড়িতে থাকা সমস্ত দেব-দেবীদের চরণে আবীর দিয়ে ভক্তি ভরে প্রণাম করুন।

৯) দোলের দিন অন্যান্য রঙের পাশাপাশি লাল, হলুদ, গোলাপি এবং নীল রঙের আবির অবশ্যই ব্যবহার করুন। এর ফলে আপনার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্যারিয়ারের উন্নতি হয় বলে ধারণা করা হয়। আর গোলাপি রং ধন-সম্পদ বৃদ্ধি করে এবং আর্থিক সমস্যা দূর করে এমনটা ধারণা নিয়ে এই সমস্ত রঙের আবির আপনার জন্য শুভ ফলদায়ক।

১০) বাড়িতে পূজা দিয়েছেন, সেই পূজার প্রসাদ আপনি পারলে আপনার বাড়ির পাশাপাশি থাকা আরও সকল আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করুন। এর ফলে আপনার সংসারে শ্রী বৃদ্ধি হবে।

১১) এই দিন ঘরে আসা কোন অতিথি, ভিক্ষুক কাউকে খালি হাতে ফেরাবেন না আপনার সাধ্যমত কিছু না কিছু দিয়ে তার মন শান্ত করে খুশি করতে পারেন।

দোল পূর্ণিমায় ঘরে থাকা কোন দেবতাকে কি দিয়ে পূজা দেবেন:

প্রতিটি গৃহস্তে বাড়িতে ঠাকুর ঘরে অনেক দেবদেবী থাকে। তবে এই দোল পূর্ণিমার শুভ দিনে প্রতিটি দেবদেবীর আলাদা আলাদা পছন্দ অনুসারে তাদের ভোগ নিবেদন ও পূজা আপনি দিতেই পারবেন। যার ফলে এই বিশেষ দিনে সুফল পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক অংশে বেশি। দোল পূর্ণিমা কিন্তু আরো পূর্ণিমার মত নয়, দোল পূর্ণিমা গুরুত্ব সকলের কাছে অনেকটাই।

দোল পূর্ণিমার আগের দিন হোলিকা দহনের সঙ্গে সব খারাপ কে পুড়িয়ে ফেলার পর এই পূণ্য তিথিতে আবার সবকিছু ভালোর সূচনা হয় বলেই আমাদের বিশ্বাস। বিশ্বাস ভক্তি এসবের মধ্যে দিয়ে সৌভাগ্যের বার্তা বয়ে আসে। তবে আপনি কিন্তু জানতে পারেন এই শুভদিনে কোন দেবতাকে কি দিয়ে পূজা দেবেন।

১) দেবাদিদেব মহাদেব কে এই দোল পূর্ণিমার দিন যখন পূজা দেবেন তখন হোলিকা দহনের যে ছাই অথবা ভস্ম রয়েছে সেটি অর্পণ করতে পারেন। তা আপনার সৌভাগ্য বয়ে আনবে।

২) দেবী দুর্গা অথবা পার্বতী কে আবির লাগানো ওড়না দিতে পারেন।

৩) দোল পূর্ণিমায় গণপতি বাপ্পা অর্থাৎ গণেশ কে ঠান্ডাই এর ভোগ দিতে একেবারেই ভুলবেন না।

৪) মহাবীর কে পুজো দিন সিঁদুর অথবা লাল আবির দিয়ে রাঙিয়ে মনের ইচ্ছাটুকু জানান। দেখবেন কিছুদিনের মধ্যে আপনার মনের ইচ্ছা পূরণ হবে।

৫) সত্যনারায়ণ কে হলুদ রংয়ের বাতাসা দিয়ে পূজা দিন। সামান্য এই নৈবেদ্যতে সত্যনারায়ণ আপনার প্রতি সন্তুষ্ট হবেন।

৬) ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কে অর্পণ করা হয় এই দোল পূর্ণিমার পূজা। তাকে ঘিরেই যে এই উৎসব। তবে এই দিন শ্রীকৃষ্ণের পূজার সাথে সাথে সেখানে অর্পণ করুন রং, আবির এবং সঙ্গে পিচকারী দিতে একেবারেই ভুলবেন না।

দোল পূর্ণিমা আবির খেলার দিন, রং খেলার দিন, এই দিন পূজা অর্চনার পাশাপাশি আরো অনেক নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয়, বিধি-নিষেধ মানতে হয়। তবে এই দিন এই সমস্ত কাজগুলি যদি আপনি ভক্তি ভরে করে থাকেন, তাহলে সংসারে সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি বজায় থাকবে আজীবন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top